দুনিয়ার দুঃখ দুঃখই না, জাহান্নামের দুঃখই আসল দুঃখ

প্রতিটি জীবকে মরতে হবে, আমি চাই বা না চাই, এদুনিয়া ছেড়ে যেতেই হবে, আসুন দুনিয়ায় থেকে আসল জিন্দিগি কবর, হাশর ও জান্নাতের পাথেয় সংগ্রহ করি।

Monday, February 29, 2016

এক বোনের ইসলামে আসার ঘটনা - 2

এক বোনের ইসলামের আলো পাওয়ার  সত্যি ঘটনা (শেষ অংশ) ১ম অংশ এখান থেকে পড়ুন। মা অনেক কষ্ট পাচ্ছিলো,অনেক কান্নাকাটি করতো। না পারছিলো সিহিন্তা মার কষ্ট দূর করতে না পারতো সঠিক পথ থেকে ভুল পথে যেতে। আমার এখনো মনে আছে সিহিন্তা শুকিয়ে কালো হয়ে গিয়েছিলো টেনশনে। আমার কথা কেও সন্দেহ করেনি বলে আমাকে তখন এই যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়নি।খ্রীস্টান সেজেই থাকতে লাগলাম সবার সাথে। এবং খুবই সাবধানে নামায পড়তাম। বাসার সব ইসলামিক বই লুকিয়ে ফেলেছিলাম। মাকে কোনো ভাবেই মুসলিম ছেলের সাথে সিহিন্তার বিয়ের জন্য রাজী করানো গেলোনা। সিহিন্তা সিদ্ধান্ত নিয়ে পারছিলোনা কি করা উচিত এখন। আগেও বলেছি এই কঠিন সময়ে এনাম আঙ্কেল,হুমায়রা আন্টি,রেহনুমা আপু,তারিনাপু মানসিক ভাবে সাপোর্ট দেয় ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। এরপর অনেক আলাপ আলোচনার পর ঠিক হলো মা-বাবাকে না জানিয়েই সিহিন্তার বিয়ে দেয়া হবে। আমার এক চাচা হবেন ওয়ালি, যার সাথে সারা জীবনে মাত্র কয়েকবার আমাদের দেখা হয়েছে। বিয়ে হবে দাদীর বাসায়। যেহেতু কর্মদিবস ছাড়া ছুটির দিন ও বাসা থেকে বের হতে পারবে না, আবার সন্ধ্যার পরও বের হওয়া যাবেনা, তাই দিন ঠিক হল ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৯; সোমবার সকালে।. রামাদানের ২৬ তারিখ। ঐ পক্ষ থেকে বিয়ের হালকা পাতলা শপিং করা হলো। আমিও টিউশনির টাকা থেকে টুকটাক কিছু শপিং করলাম ওর জন্য। কলেজে যাওয়ার পথে লুকিয়ে ওর কিছু জামা-কাপড় দিয়ে আসতাম অপু ভাইয়ার কাছে। এদিকে ভাইয়া ওর এফিডেবিটের কাজটাও সেরে ফেললো। বিয়ের আগের দিন খুব বৃষ্টি ছিল, বৃষ্টির মধ্যে আমরা দুই বোন শেষবারের মত ঘুরতে বের হলাম। বসুন্ধরা সিটিতে ইফতার করলাম একসাথে। সিহিন্তার যে বিয়ে হয়ে যাবে,ও দূরে চলে যাবে সবই জানতাম কিন্তু তখনো মন থেকে মেনে নেইনি। সব এতো দ্রুত হচ্ছিলো যে কখন কিভাবে কি হয়ে যাচ্ছে বুঝে উঠতেই পারছিলাম না। যেন সব আগে থেকেই প্ল্যান করা। আল্লাহ কখন কি হবে সব ঠিক করে রেখেছিলেন। বাসায় ফিরে সিহিন্তা সারা রাত জেগে মাকে একটা চিঠি লিখল। ওর এই কাজের জন্য মা যেন ওকে ভুল না বুঝে, ওর এভাবে চলে যাওয়ার মূল কারন সংক্ষেপে বর্ননা করা হল। পরদিন সকালে মা অফিসে, আমি কলেজে চলে যাওয়ার পর ও মার আলমারিতে চিঠিটা রেখে কাউকে কিছু না জানিয়ে বের হয়ে আসল। কিছু দ্বিনী বোন একটু দূরে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষায় ছিল। ওদের সাথে ও দাদীর বাসায় চলে গেল। ওরা ছিল NSU এর রিদিতা, মাহমুদা, আয়শা, আইনুর এবং আরো কিছু বোন যাদের নাম এখন মনে পড়ছে না। দাদীর বাসায় খুব দ্রুত বিয়েটা হয়ে গেলো। আমি কলেজ থেকে গিয়েছিলাম। বিয়ের পরপরই ওকে নিয়ে ভাইয়ারা ওদের বাসায় চলে গেলো। আমি বাসায় চলে আসলাম।.বাসায় আসার পর হটাত করেই কেমন জানি খালি খালি লাগছিলো। এই প্রথম বুঝতে পারলাম সিহিন্তা চলে গেছে। আর আগের মতো একসাথে পড়তে বসবোনা,একসাথে রাত জেগে গল্প করা হবেনা,একসাথে লুকিয়ে সালাত পড়া হবেনা। কলেজ থেকে এসে সারাদিনের কাহিনী বলার কেও নাই। এতো একা লাগছিলো! ওর বিয়ের পর প্রথম বার এতো কাঁদলাম। মা আসলে বাসায়, সবাই জানতে পারলে বিয়ের কথা কি হবে এসব.তখন মাথায় আসেনি। শুধু বুঝতে পারছিলাম আমি একা হয়ে গেছি। [এখন থেকে আমার কাহিনী থাকবে ইন শা আল্লাহ। ] সিহিন্তার বিয়ে হয়ে গেলো। মা- বাবা জানতে পেরে ওর বাসায় ছুটে গেলো। তারা বিশ্বাস করতে পারছিলোনা। সিহিন্তা যে না জানিয়ে বিয়ে করার মতো কাজ করতে পারে তা আসলে কেও ভাবতেও পারেনি। শুধু মা বাবা না,আমার কোনো আত্মিয়ও প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেনি। বিয়ে হয়ে গেছে। এখন আর কিছু করার নাই। মা-বাবা বিয়েটা মেনে নিলো। কিন্তু মা অনেক কষ্ট পেয়েছিলো। সারাদিন কাঁদতো। মাঝে মাঝে মনে হতো এমন আঘাতে মার মানসিক অবস্থায়ও প্রভাব পরেছিলো। কষ্ট পেলেও মা রোজ সিহিন্তাকে কল করে খোঁজ নিতেন। ওর বাসায়ও যেতেন ওকে দেখতে। মা আসলে আমাদের অনেক বেশি ভালোবাসতো। সিহিন্তার বিয়ে হয়ে গেলো,আর তখন থেকেই আমার আসল পরীক্ষা শুরু হলো।. মা রোজ কাঁদতো আর বলতো যে "তোমার বোন আমাকে কষ্ট দিয়েছে,তুমি এমন কষ্ট দিওনা,তাহলে আমি মারা যাবো।" আমি কিছুই বলতে পারতাম না। চুপ করে থাকতাম। সব আত্মীয়রাও একি কথা বলতো। বলতো যে তুমি তো দেখতেই পাচ্ছো তোমার ...