Saturday, March 28, 2015

সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়ম ও পদ্ধতি

সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়ম ও পদ্ধতি

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) তাঁর চাচা হজরত আব্বাস (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘চাচা, পারলে আপনি সালাতুত তাসবিহ নামাজ সপ্তাহে একবার, তাও না পারলে মাসে একবার, তাও না পারলে বছরে একবার পড়বেন। অন্তত জীবনে একবার হলেও নামাজ পড়বেন। নামাজ দ্বারা জীবনের ছগিরা, কবিরা, ইচ্ছাকৃত, অনিচ্ছাকৃত, নতুন, পুরনো, গোপন, প্রকাশ্য_সব রকম গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
এখন সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়মাবলি আমরা জেনে নিতে পারি। সালাত শব্দের অর্থ নামাজ। আর তাসবিহ শব্দের অর্থ এখানেসুবাহানাল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার’_এই তাসবিহকে বোঝানো হয়েছে। সুতরাং যে নামাজে তাসবিহ পড়া হয় তাকে সালাতুত তাসবিহ নামাজ বলে। নামাজ হলো চার রাকাত। প্রতি রাকাতে উপরিউক্ত তাসবিহ ৭৫ বার পড়তে হয়। তাহলে চার রাকাতে ৩০০ বার হয়।
সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়ার দুটি নিয়ম আছে।
প্রথম নিয়ম হলো :
প্রথমে নিয়ত করবে, আমি চার রাকাত সালাতুত তাসবিহ নফল নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম। এরপর ছানা অর্থাৎ সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা_এটা পড়বে। এরপর যেকোনো সুরা মেলাবে। সুরা শেষ করে ওই দাঁড়ানো অবস্থায়ই ১৫ বার তাসবিহ পাঠ করবে। এরপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যাবে। রুকুর তাসবিহ পড়ার পর আবার ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বে। এরপর রুকু থেকে উঠেরাব্বানা লাকাল হামদবলার পর আবার ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বে। এরপর সিজদায় যাবে। সিজদার তাসবিহ পড়ার পর ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বে। সিজদা থেকে উঠে দুই সিজদার মাঝখানে আবার ১০ বার পড়বে। দ্বিতীয় সিজদায় সিজদার তাসবিহ পড়ার পর আবার ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বে। এই হলো ৬৫ বার। এখন আবারআল্লাহু আকবারবলে দ্বিতীয় সিজদা থেকে উঠে বসে ১০ বার পড়বে। অতঃপর দাঁড়াবে। এই হলো এক রাকাতে ৭৫ বার। এবার দ্বিতীয়, তৃতীয় চতুর্থ রাকাতে একইভাবে সুরা তাসবিহ পড়তে হবে। দ্বিতীয় রাকাতে শেষ রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার আগে ১০ বার তাসবিহ পড়ে নিতে হবে। তারপর সালাম ফেরাতে হবে। কোনোভাবেই আত্তাহিয়্যাতুর পর তাসবিহ পড়া যাবে না এবং কোনোভাবেই প্রতি রাকাতে ৭৫ বারের বেশি পড়া যাবে না।

দ্বিতীয় নিয়ম হলো :
নিয়ত বেঁধেই ছানা পড়ার পর সুরা-কিরাত পড়ার আগেই ১৫ বার, সুরা-কিরাত শেষে ১০ বার। এখানে দাঁড়ানো অবস্থায় ১০ বারের বেশি হয়ে গেলে, এই নিয়মে পড়লে দ্বিতীয় সিজদা থেকে সোজা দাঁড়িয়ে যাবে। দ্বিতীয় সিজদাতেই ৭৫ বার হয়ে যাবে এবং আত্তাহিয়্যাতুর আগে ওই তাসবিহ পড়তে হবে না। তাসবিহ ৩০০ বার হতে হবে, কম হলে সালাতুত তাসবিহের ফজিলত পাওয়া যাবে না। তাই খুব সতর্কতার সঙ্গে পড়তে হবে। যদি কেউ কোনো এক জায়গায় তাসবিহ পড়তে ভুলে যায় বা কম থেকে যায়, তাহলে পরবর্তী সময়ে যে জায়গায় মনে আসবে, সেখানে ছুটে যাওয়াটাও আদায় করে নেবে। সালাতুত তাসবিহ যেকোনো সুরা দিয়ে পড়া যায়। তবে কেউ কেউ বলেছেন, নামাজে সুরা আসর, কাউছার, কাফেরুন ইখলাছ পড়া উত্তম। সালাতুত তাসবিহ ছাড়া এমন আরো যত নফল নামাজ আছে, তা যেকোনো সুরা দিয়ে পড়া যেতে পারে। কোনো কোনো বইপুস্তকে লেখা পাওয়া যায়, শবেবরাতে নামাজে অমুক সুরা এতবার পড়তে হয়, এটা ঠিক নয়। এসব বক্তব্য অসমর্থিত। শবেবরাতের নফল নামাজে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে অমুক সুরা পড়তে হবে বা অমুক সুরা পড়া যাবে না। মনে রাখতে হবে, যেকোনো নফল নামাজে যেকোনো সুরা পড়া যায়।

লেখক : খতিব,  মোল্লাপাড়া জামে মসজিদ, দক্ষিণখান, ঢাকা

27 comments:

  1. এই হাদিস কিতাব এর নাম কি..?

    ReplyDelete
    Replies
    1. টেনশান নিবেন না ব্রো,,,, এটা সহিহ হাদিস মানে সিহাহ সিত্তাহের হাদিস

      Delete
    2. সুনানে আবু দাউদ,হাদীস নং- ১২৯৭

      Delete
  2. অর্থাৎ ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আব্বাস ইবনে আব্দিল মুত্তালিবকে বলেছেন, হে চাচা! আমি কি আপনাকে দেব না? আমি কি আপনাকে প্রদান করব না? আমি কি আপনার নিকটে আসব না? আমি কি আপনার জন্য দশটি সৎ গুনের বর্ণনা করব না যা করলে আল্লাহ তাআলা আপনার আগের ও পিছনের, নতুন ও পুরাতন, ইচ্ছায় ও ভুলবশত কৃত, ছোট ও বড়, গোপন ও প্রকাশ্য সকল গুনাহ মাফ করে দেবেন?

    আর সে দশটি সৎ গুন হলো: আপনি চার রাকাত নামাজ পড়বেন। প্রতি রাকাআতে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়বেন। প্রথম রাকাতে যখন কিরাআত পড়া শেষ করবেন তখন দাঁড়ানো অবস্থায় ১৫ বার বলবেন:

    سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ {উচ্চারণঃ সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদু লিল্লাহহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার}

    এরপর রুকুতে যাবেন এবঃ রুকু অবস্থায় (উক্ত দুআটি) ১০ বার পড়বেন। এরপর রুকু থেকে মাথা ওঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদায় যাবেন। সিজদারত অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা উঠাবেন অতঃপর ১০ বার পড়বেন। এরপর আবার সিজদায় যাবেন এবং সিজদারত অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা ওঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এ হলো প্রতি রাকাতে ৭৫ বার।

    আপনি চার রাকাতেই অনুরূপ করবেন। যদি আপনি প্রতিদিন আমল করতে পারেন, তবে তা করুন। আর যদি না পারেন,তবে প্রতি জুমাআয় একবার। যদি প্রতি জুমআয় না করেন তবে প্রদি মাসে একবার। আর যদি তাও না করেন তবে জীবনে একবার।

    {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১২৯৭,

    সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৩৮৭,

    সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১২১৬,

    সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৬৯৫}

    হাদীসটি সহীহ। উক্ত হাদীসকে যারা সহীহ বলেছেন!

    ১ ইমাম আবু দাউদ, হাদীস নং-১২৯৭, [ইমাম আবু দাউদ হাদীস বললে, চুপ থাকলে সেটি তার কাছে সহীহ।

    ২ ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ বলেন, এর সনদটি হাসান। [আলখিছাল-১/৪১]

    ৩ আল্লামা ওয়াদেয়ী বলেন, হাসান। [সহীহুল মুসনাদ, হাদীস নং-৫৮২]

    ৪ ইবনুল মুলাক্কিন বলেন, এর সনদ উত্তম। [আবদরুল মুনীর-৪/২৩৫]

    ৫ ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ বলেন, হাসান। [তাখরীজুল মিশকাতুল মাসাবীহ-২/৭৮]

    ৬ শায়েখ নাসীরুদ্দীন আলবানী বলেছেন, হাদীসটি সহীহ। [সহীহুল জামে, হাদীস নং-৭৯৩৭]

    এতগুলো মুহাদ্দিস হাদিসটি সহীহ ও হাসানের মর্যাদা দেবার পরও একে বাতিল বলা ধৃষ্ঠতা ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।

    দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহ্হুদ পড়ার জন্য বসবে তখন আগে উক্ত তাসবীহ ১০ বার পড়বে তারপর তাশাহ্হুদ পড়বে। তারপর আল্লাহু আকবার বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য উঠবে। অতঃপর তৃতীয় রাকাত ও চতুর্থ রাকাতেও উক্ত নিয়মে উক্ত তাসবীহ পাঠ করবে।

    তাসবীর বাংলা উচ্চারণ হলো-“সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার”

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ ভাই আপনি এই লেখা টা কোথা থেকে পেয়েছেন যানালে উপকৃত হতাম

      Delete
  3. এই নামাজ কি বুখারী শরিফে নাই

    ReplyDelete
    Replies
    1. আরে ভাই, বোখারি শরিফ আর মুসলিম শরিফ এর মধ্যে পার্থক্য কোথায়? দুটোই তো সিহাহ সিত্তাহের হাদিসের কিতাব বা সমমানের সহি হাদিস,,,

      Delete
  4. আলহামদুলিল্লাহ, এই নামাজের আমলটা করলে আলাদা শান্তি পাই,,, প্রতি সপ্তাহিক ছুটিতে করার চেষ্টা করি।

    ReplyDelete
  5. ধন্যবাদ ভাই

    ReplyDelete
  6. আমি এখনও পডিনাই তুপিক দাও আল্লাহ।

    ReplyDelete
  7. আচ্ছা ভাই,,কোন কারনে বেশি হলে তজবি পড়া সমস্যা হবে কি,,,,মনে করেন,হয়তবা ১ বার ভুল হইছে অথবা কম হইছে মনে হয়,,এই জন্য বেশি পরলে নামাজ হবে কি??

    ReplyDelete
    Replies
    1. নামাজে দাড়াই তাসবি কয়বার পরলাম তা গুনব না কি আল্লার সাথে মেরাজ করব?? দুইটা একসাথে করব কেমনে ???
      তসবি তো কম বা বেশি হইতে পারে তখন কি কটমো???? তাসবিহ গননা কি দিয়ে করমো

      Delete
  8. যদি কেই এই নামাজ জামাতের সাথে আদায় করতে চায় এবং নামাজে সে ইমাম হতে চায় তবে তার নিয়ত কি হবে

    ReplyDelete
  9. আচ্ছা এই নামাযের মাধ্যমে কি মনের আশা বা ইচ্ছা বা কোন উদ্দেশ্য সফল হয়?

    ReplyDelete
  10. আলহামদুলিল্লাহ আমি পড়েছি

    ReplyDelete
  11. হাত না নাড়িয়ে আঙ্গুল টিপে টিপে গননা করা যায়

    ReplyDelete
  12. জাযাকাল্লাহু খাইরান

    ReplyDelete
  13. জাযাকাল্লাহু খাইরান

    ReplyDelete
  14. ৩০০ বারের বেশি তসবিহ হয়ে গেলে কি নামাজ হবেনা??

    ReplyDelete
  15. ধন্যবাদ, ইসলামের জন্যঅবদান রাখায়

    ReplyDelete
  16. ধন্যবাদ! আল্লাহ আপনাকে এর যাযা দান করুণ। আমিন!

    ReplyDelete
  17. নিয়ত জানা আছে কি??

    ReplyDelete
  18. এই নামাজ টা কি সুন্নত না নফল

    ReplyDelete