Tuesday, July 1, 2014

সুস্থতার জন্য নামাজ

সুস্থতার জন্য নামাজ

ইসলাম প্রায় ১৫০০ বছর আগে যে পদ্ধতি উপহার দিয়েছিল আজ তার মধ্যে উত্তম শরীর চর্চার সুফল প্রমাণিত হয়েছে
** এজে ইকবাল আহমদ **

নামাজ হলো উত্তম ব্যায়াম। অলসতা ও বিষণ্নতার যুগে নামাজই একমাত্র ব্যায়াম, যা দ্বারা ইহকালিন বেশিরভাগ ব্যথার উপশম হয়। সঠিক পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করলে অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন মস্তিষ্ক, গর্দান, সিনা, ফুসফুসকে সতেজ রাখে। মানুষ সারা রাত শুয়ে ঘুমায়, ফলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। রক্ত চলাচল কমে যায়। সে জন্য রাখা হয়েছে তাহাজ্জুদের নামাজ ও ফজরের নামাজ। কিছুক্ষণ বিরতি সকালের নাস্তার জন্য। পরে ইশরাক বা চাশতের নামাজ। কাজে-কর্মে মানুষকে ব্যস্ত থাকতে হয় বলে লম্বা বিরতি দিয়ে রাখা হয় জোহরের নামাজ। আর রাতে এশার নামাজটা একটু দীর্ঘ করা হয়েছে বিতর ও হালকা নফলসহ। কারণ অনেকেই এশার নামাজের আগে পানাহার সেরে ফেলেন, এতে হজমের সুবিধা হয়। কাজেই আল্লাহ কত সুপরিকল্পিতভাবে নামাজের সময় বেঁধে দিয়েছেন ভাবতে অবাক লাগে। পবিত্র ধর্ম ইসলাম প্রায় ১৫০০ বছর আগে যে পদ্ধতি উপহার দিয়েছিল আজ তার মধ্যে উত্তম শরীর চর্চার সুফল প্রমাণিত হয়েছে।

জানা যায়, একজন চিকিৎসক নিয়মিত নামাজ আদায় করে সুস্থ হলেন। এ ঘটনা থেকে চিকিৎসক শিক্ষা নিলেন এবং তার প্রত্যেক মুসলিম রোগীকে যারা চলাফেরায় সক্ষম তাদের নামাজ পড়তে বললেন। এভাবে তার বেশিরভাগ রোগী আরোগ্য লাভ করতে লাগল। নামাজ দ্বারা যেসব রোগ নিরাময় হয় ডাক্তার তার একটি তালিকা তৈরি করলেন। সে তালিকায় দেখা গেল, নামাজ দ্বারা ৮টি রোগ থেকে মুসলিম জাতি মুক্তি লাভ করতে পারে। সেগুলো হলো- ১. মানসিক রোগ ২. স্নায়ুবিক রোগ যা বর্তমান সময়ে বেড়ে গেছে আর দেশে ভালো নিউরোলজিস্টের দারুণ সঙ্কট ৩. অস্থিরতা ৪. মনস্তাত্তি্বক রোগ ৫. হার্টের রোগ ৬. জোড়ার ব্যথা ৭. ইউরিক এসিড থেকে সৃষ্ট রোগ এবং ৮. পাকস্থলী ও আলসারের রোগ।

এ তালিকা তৈরি করেছেন একজন বিখ্যাত ফিজিশিয়ান, কোনো মৌলবি নন। তাই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হবেন, আমরা বেহেশত পাব, আর নামাজ না পড়লে কবর আজাব হবে এবং আখেরাতে জাহান্নামে যাব, এটা ভাবলেও চিকিৎসাশাস্ত্রে এর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব প্রমাণিত।

সবশেষে ইউরোপের এক ব্যক্তির ভ্রমণ কাহিনীর কিছু বিবরণ তুলে ধরছি। সেই ব্যক্তি লিখেছেন, আমি একদিন নামাজ পড়ছিলাম আর এক ইংরেজ দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে তা দেখছিল। আমার নামাজ পড়া শেষ হলে সে আমাকে বলতে লাগল, 'তুমি এখন যেভাবে ব্যায়াম করলে তা নিশ্চয়ই আমার লেখা বই থেকে জেনেছ। কেননা, আমি এ নিয়মে ব্যায়ামের পদ্ধতি লিখেছি।' তখন সেই ব্যক্তি ওই ইংরেজকে বললেন, আমি তো মুসলমান, আমার ধর্ম ইসলাম আমাকে রোজ পাঁচবার এভাবে ধর্মীয় কাজ করার আদেশ দিয়েছেন। আমি আপনার কোনো ব্যায়ামের বই পড়িনি। সেই ইংরেজ ব্যক্তি তখন অবাক হয়ে বলল, যে ব্যক্তি এ পদ্ধতিতে রোজ ব্যায়াম করবে সে কখনও দীর্ঘমেয়াদি, জটিল, মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হবে না। ওই ইংরেজ তখন ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা নিতে লাগল।

অমুসলিমরা যে পদ্ধতিকে স্বীকার করে ব্যায়াম হিসেবে, আমরা সেই নামাজকে তেমন গুরুত্ব দিই না। অনেক সময় যানবাহনে চলার সময় বা ছোট বাচ্চা প্রস্রাব করে কাপড় নষ্ট করলে হয়তো শরীর না ধুয়ে নামাজ পড়া যায় না, কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ কাজা করা উচিত নয়। কারণ শুধু সওয়াব অর্জনের জন্য নয়, নামাজ যে সর্বশ্রেষ্ঠ শরীরচর্চা এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। তাই নামাজ পড়ুন, শরীরকে সুস্থ রাখুন, কারণ সুস্থতা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত।
- See more at: http://www.alokitobangladesh.com/islam/2014/04/18/66754#sthash.WZmPdm8q.dpuf

0 comments:

Post a Comment