দুনিয়ার দুঃখ দুঃখই না, জাহান্নামের দুঃখই আসল দুঃখ

প্রতিটি জীবকে মরতে হবে, আমি চাই বা না চাই, এদুনিয়া ছেড়ে যেতেই হবে, আসুন দুনিয়ায় থেকে আসল জিন্দিগি কবর, হাশর ও জান্নাতের পাথেয় সংগ্রহ করি।

দুনিয়ার সুখ সুখ না, জান্নাতের সুখই আসল সুখ

হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমাকে দেখেছে এবং আমার উপর ঈমান এনেছে তার জন্য তো একবার মোবারকবাদ। আর যে আমাকে দেখে নাই তারপরেও আমার উপর ঈমান এনেছে তাকে বারবার মোবারকবাদ - মুসনাদ আহমাদঃ ৩/১০০

কালেমা পড়ি, ঈমান আনি, বলি আমি মুসলিম

“ তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের(কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে।” -সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০

দুনিয়া ক্ষনস্থায়ী, নিশ্চই আমিও দুনিয়ায় ক্ষনস্থায়ী

“ রাসুলে পাক (সা:) বলেছেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমার উম্মতের উপর সর্বপ্রথম নামাজ ফরজ করেছেন এবং কেয়ামতের দিন সবার আগে নামাজের হিসাব নয়া হবে।ে।” -সূরা আল-ইমরান, আয়াত-১১০

নামাজ বেহেস্তের চাবি

হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমাকে দেখেছে এবং আমার উপর ঈমান এনেছে তার জন্য তো একবার মোবারকবাদ। আর যে আমাকে দেখে নাই তারপরেও আমার উপর ঈমান এনেছে তাকে বারবার মোবারকবাদ - মুসনাদ আহমাদঃ ৩/১০০

Friday, June 27, 2014

তারাবি নামাজ অশেষ পুণ্যের কাজ


তারাবি নামাজ অশেষ পুণ্যের কাজ


রমজান মাসের রাতে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, একে তারাবি নামাজ বলা হয়। আরবি ‘তারাবিহ’ শব্দটির মূল ধাতু ‘রাহাতুন’ অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা। ইসলামের পরিভাষায় মাহে রমজানে তারাবি নামাজ পড়াকালীন প্রতি দুই রাকাত অথবা চার রাকাত পর পর বিশ্রাম করার জন্য একটু বসার নামই ‘তারাবি’।

মাহে রমজানে রোজাদার সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রেখে ক্লান্ত হয়ে যান। তারপর রাতে এশা ও তারাবি নামাজ দীর্ঘসময় ধরে পড়তে হয়। ফলে রোজাদার খুবই ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েন, যেখানে পরিশ্রম ও কষ্ট বেশি, সেখানে ক্ষতিপূরণমূলক আরামের ব্যবস্থাও আছে। অবশ্য সিয়ামের মূল লক্ষ্য আরাম-আয়েশপ্রবণতা সংযতকরণ। সে কারণে দীর্ঘ নামাজের কঠোর পরিশ্রম লাঘব করার জন্য প্রতি দুই রাকাত, বিশেষ করে প্রতি চার রাকাত পর একটু বসে বিশ্রাম করতে হয় এবং দোয়া ও তসবিহ পাঠ করতে হয়। এ জন্য এই নামাজকে ‘সালাতুত তারাবিহ’ বা তারাবি নামাজ বলা হয়।
রমজান মাসের নির্দিষ্ট নামাজ হচ্ছে সালাতুত তারাবিহ। তারাবির নামাজ হলো রোজার গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। রমজান মাসে তারাবি নামাজ জামাতে পড়া ও সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে তারাবি নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবায়ে কিরামকেও পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তারাবি নামাজ নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এ নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা বেশি সওয়াবের কাজ। তবে ঘরেও আদায় করা যেতে পারে। এ নামাজে কোরআন শরিফ খতম করা অধিক সওয়াবের কাজ। তবে সূরা-কিরাআতের মাধ্যমে আদায় করলেও নামাজের সব সওয়াবই পাওয়া যায়। কোরআন মজিদ যে ৫৪০ রুকুতে বিন্যাসিত হয়েছে, তা তারাবির নামাজে প্রতিদিন ২০ রাকাতে ২০ রুকু করে পড়লে ২৭ রমজান লাইলাতুল কদরে পবিত্র কোরআনের সম্পূর্ণটুকু যাতে পাঠ করা সমাপ্ত হয়, সেদিকে ইমাম সাহেবদের বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার।
রাসুলুল্লাহ (সা.) তারাবি নামাজের জন্য রাতের কোনো বিশেষ সময়কে নির্দিষ্ট করে দেননি। তবে তারাবি নামাজ অবশ্যই এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ববর্তী সময়ের মধ্যে আদায় করতে হবে। নবী করিম (সা.) এ নামাজ বেশির ভাগ সময় রাতের শেষাংশে আদায় করতেন এবং প্রথমাংশে বিশ্রাম নিতেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করেছেন। তিনি কখনো আট রাকাত, কখনো ১৬ রাকাত, আবার কখনো ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করেছেন। ২০ রাকাত তারাবি নামাজ হওয়ার স্বপক্ষে সহিহ হাদিসে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, ‘নবী করিম (সা.) রমজান মাসে বিনা জামাতে (একাকী) ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করতেন, অতঃপর বিতর নামাজ পড়তেন।’ (বায়হাকি)
মহানবী (সা.)-এর ওফাতের পর তারাবি নামাজ ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আর থাকেনি। তাই তারাবির প্রতি যথাযথ গুরুত্ব হজরত ওমর (রা.)-এর আমলে কার্যকর হয়। মহানবী (সা.) রমজান মাসে তারাবি নামাজ আদায় করার জন্য বিশেষভাবে উৎসাহ প্রদান করতেন। মাহে রমজানের তারাবি যদি একমাত্র ইমান ও পরকালের প্রত্যাশার তাগিদে পড়া হয়, তাহলে অতীতের সব অপরাধ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। তারাবি নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে পুণ্য লাভের আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করেন, তাঁর অতীতকৃত পাপগুলো ক্ষমা করা হয়।’ (বোখারি ও মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সর্বদা তারাবি নামাজ আদায় করতেন। তবে তিনি মাত্র চার রাত তারাবি নামাজ জামাতে পড়েছিলেন, আর কখনো তিনি তারাবি নামাজ জামাতে পড়েননি। কারণ, নবীজি মনে করেছিলেন যে যদি তিনি সর্বদা জামাতে তারাবি নামাজ আদায় করেন, তাহলে তাঁর উম্মতেরা ভাববেন যে হয়তো এই তারাবি নামাজ ফরজ। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) দুই রাতে ২০ রাকাত করে তারাবি নামাজ পড়িয়েছেন। তৃতীয় রাতে লোকজন জমা হলেও রাসুলুল্লাহ (সা.) উপস্থিত হননি। পরের দিন সকালে তিনি ইরশাদ করলেন, ‘আমি তোমাদের ওপর তারাবি নামাজ ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছি। তখন তো তা তোমাদের জন্য কষ্টকর হবে।’ তাই ইচ্ছাকৃত ও নিয়মিত নয়, বরং দৈহিক বা মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে ২০ রাকাত অথবা আট রাকাত তারাবির সুন্নত নামাজ পড়ার সুযোগ আছে।
রমজান মাসে তারাবি নামাজ পড়া অত্যন্ত পুণ্যের কাজ। তারাবি নামাজে এক খতম কোরআন শরিফ পাঠ করা কিংবা শোনা সওয়াবের কাজ। এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা রমজানের রোজাগুলো ফরজ করেছেন এবং এর রাতে তারাবি নামাজের জন্য দণ্ডায়মান হওয়াকে অশেষ পুণ্যের কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।’
রমজানের পুরো এক মাস রাতে তারাবি নামাজ জামাতে আদায়ের জন্য ধর্মপ্রাণ রোজাদার মুসল্লিরা প্রতিদিন মসজিদে সমবেত হন। সুদীর্ঘ একটি মাস তাঁদের পরস্পরের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ হওয়ার ফলে নামাজিদের মধ্যে একে অপরের প্রতি মমত্ববোধ, সম্প্রীতি, ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সৌহার্দ্য গড়ে ওঠে। দেশের প্রতিটি মসজিদে একই পদ্ধতিতে খতমে তারাবি পড়ার লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ রোজার প্রথম ছয় দিন দেড় পারা করে ও পরে লাইলাতুল কদর পর্যন্ত বাকি ২১ দিন ১ পারা করে তিলাওয়াত করার পরামর্শ দিয়েছে। যেন স্থান পরিবর্তন করলেও কোনো মুসল্লি খতমে তারাবিতে কোরআন তিলাওয়াতে শরিক হওয়ার ধারাবাহিকতা থেকে বঞ্চিত না হন। সুতরাং যাঁরা খতমে তারাবিতে শরিক হবেন, যথারীতি তাঁরা এ সম্মানজনক মর্যাদায় ভূষিত হবেন নিঃসন্দেহে। আল্লাহ তাআলা রোজাদারদের মাহে রমজানে তারাবি নামাজের অশেষ গুরুত্ব ও অপরিসীম ফজিলত উপলব্ধি এবং জামাতে খতমে তারাবি আদায়ের মাধ্যমে অধিক পুণ্য লাভের তাওফিক দান করুন! আমিন!!
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।

Tuesday, June 24, 2014

Banner image

Banner  image
Picture of Holly palaces Islsam , moque, Seneries etc